প্রসাব অসংযম হলো মূত্রথলির ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণ কমে যাওয়া এবং অনভিপ্রেত ভাবে প্রসাব হয়ে যাওয়া। এই রোগটি তে সব থেকে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন বয়স্ক মহিলা রা। তবে, বয়স্ক পুরুষ দেরও এই রোগটি হতে পারে।
মানব দেহের মূত্রথলির নির্গমন নিয়ন্ত্রণ করে স্ফিংটার নামক একটি পেশী। কোনো কারণ বসত এই স্ফিংটার পেশী দুর্বল হয়ে গেলে, মূত্রথলির ওপর নিয়ন্ত্রণ কমে যায়। এর অন্যতম একটি কারণ হলো মূত্রথলির আস্তরণের মধ্যে প্রদাহ। অনেকসময় মূত্রথলির মধ্যে হওয়া টিউমার থেকেও স্ফিংটার পেশীর কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। মূত্রথলির মধ্যে পাথর হলেও এই সমস্যাটি হতে পারে। এগুলো ছাড়াও স্ট্রোক, ডিপ্রেসন ইত্যাদি থেকেও এই সমস্যার সৃষ্টি হয়। আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ কারন হলো কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যেমন ঘুমানোর ওষুধ, উদ্বেগ কমানোর ওষুধ, পেশী শিথিল করার ওষুধ ইত্যাদি।
১.এই রোগের সব থেকে পরিচিত লক্ষণ হলো মূত্রত্যাগের বেগ বুঝতে না পারা এবং বিছানার মধ্যে মূত্রত্যাগ করে ফেলা
২. কাশি, হাঁচি ইত্যাদির সময় মূত্রত্যাগ করে ফেলা
৩. ঘন ঘন মূত্র ত্যাগ করার অনুভূতি কিন্তু ঠিক ভাবে মূত্র নির্গমন না হওয়া।
৪. বার বার মূত্র ত্যাগ করার পরেও সম্পূর্ণ প্রসাব বের না হওয়ার মতো অনুভূতি
এই রোগের চিকিৎসার প্রথম ধাপে রোগীর স্বাভাবিক জীবন বজায় রাখতে ইউরিন ড্রেনেজ ব্যাগ, ডায়পার ইত্যাদি ব্যাবহার করা হয়। বায়ো ফিডব্যাক একটি পদ্ধতি যেখানে রোগী কে নিজের দেহ সম্পর্কে সচেতন করে তোলা হয়, যাতে ধীরে ধীরে স্ফিংটার পেশীর ওপর রোগীর নিয়ন্ত্রণ ফিরে আসে। কেগেল এক্সারসাইজ এর ব্যাবহারও এই রোগের চিকিৎসায় বহুল প্রচলিত। এগুলি ছাড়াও রয়েছে টাইমড ভয়েডিং, যেখানে একটি নির্দিষ্ট সময়ে রোগী কে প্রসাব করার ট্রেনিং দেওয়া হয়।
সতর্কতা
১. একটি স্বাভাবিক ওজন ধরে রাখা
২. কফি, ধূমপান, মদ্যপান এগুলি কম করা
এটি মূত্রনালীর সংক্রমণ যা মূত্রনালীর মধ্যে ব্যাকটেরিয়ার অনিয়ন্ত্রিত ভাবে বৃদ্ধির ফলে হয়ে থাকে। প্রধানত এই সমস্যা টি হয় ই.কোলাই ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতির ফলে। তবে এটি ছাড়াও কিছু ছত্রাকের আক্রমণের ফলেও এই সমস্যা টি সৃষ্টি হতে পারে। যখন সংক্রমণ টি শুধুমাত্র মূত্রনালীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে সেটিকে সিস্টাইটিস বলা হয় কিন্তু সংক্রমণ আরো ওপর পর্যন্ত পৌঁছে গেলে যেমন কিডনি আক্রান্ত হয়ে গেলে সেটিকে পাইলো নেফ্রাইটিস বলা হয়।
এই রোগে সব থেকে বেশি আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে মহিলা দের। যেহেতু মহিলাদের উরেথ্রার দৈর্ঘ্য কম হয়, তাই সহজেই এই সংক্রমণ টি ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়াও লম্বা সময় ধরে ক্যাথিটারের ব্যাবহার, অনিয়ন্ত্রিত যৌনমিলন, ভ্যাজাইনাল ইনফেকশন ইত্যাদি থেকেও এই সংক্রমণ টি হতে পারে। যে সমস্ত মহিলার ডায়াবেটিস আছে এবং মোনোপজে পৌঁছে গেছেন তাদের এই সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি।ছেলেদের ক্ষেত্রে সাধারনত এই রোগটি হয় ৫০ বছর বয়সের পর থেকে। ইউরিনারি ট্র্যাক্টের মধ্যে ব্লকেজ, ক্যাথিটারের ব্যাবহার ইত্যাদি থেকে এটি ছড়ায়।
১. মূত্রত্যাগের সময় জ্বালা এবং ব্যাথা
২. দুর্গন্ধ যুক্ত গোলাপী, হলুদ রঙের মূত্র, সঙ্গে রক্ত
৩. তলপেটে ব্যাথা
৪. বার বার মূত্র ত্যাগ করার অনুভূতি
৫. জ্বর ও বমি
এই রোগের চিকিৎসাই ওষুধের ব্যাবহার বহুল প্রচলিত। অ্যান্টি ব্যাকেরিয়াল, অ্যান্টি ফাঙ্গাল ওষুধ, ব্যাথা কমানোর ওষুধ ইত্যাদি চিকিৎসক ব্যাবহার করার নির্দেশ দিয়ে থাকেন। ইউরিনারি ট্র্যাক্টের মধ্যে ব্লকেজ, পাথর, জন্মগত ত্রুটি ইত্যাদি থেকে ইউ টি আই হলে সেক্ষেত্রে চিকিৎসক অস্ত্রপ্রচার করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
১. মূত্রের বেগ চেপে না রাখা এবং মূত্র ত্যাগ করার পর ইউরেথ্রাল ওপেনিং টি ভালো ভাবে পরিষ্কার করা।
২. প্রচুর পরিমাণে জল পান করা
৩. যৌনমিলনের সময় প্রোটেকশন ব্যাবহার
৪. ডায়াবেটিস থাকলে সেটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা
এই রোগটি সৃষ্টি হয় যখন ব্লাডার কে ধরে রাখা পেশী এবং লিগামেন্ট গুলি আলগা হয়ে যায়, ফলে ব্লাডার টি ইউরেথ্রাল ওপেনিং এর কাছাকাছি চলে আসে। এই রোগটি খুবই বেদনাদায়ক এবং রোগীর স্বাভাবিক মূত্রত্যাগে বাধা সৃষ্টি করে। এই রোগটিকে তিনটি গ্রেডে ভাগ করা হয় মাইল্ড, মডারেট এবং সিভিয়ার।
এই সমস্যা টি তৈরি হওয়ার একটি বড়ো কারণ হলো নর্মাল ডেলিভারির মাধ্যমে বাচ্চার জন্ম দেওয়া, যেটির ফলে পেলভিক ফ্লোরের পেশী গুলির ওপর অতিরিক্ত টান পরে এবং পেশী গুলি আলগা হয়ে যায়। এছাড়াও এই রোগের পারিবারিক ইতিহাস থাকলেও এই সমস্যা টি তৈরি হতে পারে। যে সমস্ত ব্যক্তির ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি তাদের এই সমস্যাটি হওয়ার তীব্র সম্ভাবনা রয়েছে। এগুলি ছাড়াও বয়স বাড়ার সাথে সাথে ইস্ট্রোজেন হরমোনের কমে যাওয়াও এই রোগটি সৃষ্টি তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
১. ভ্যাজাইনাল ওপেনিং এর মধ্যে দিয়ে ব্লাডার টি দেখতে পাওয়া
২. তলপেটে ব্যথার অনুভূতি যা ভারী বস্তু তোলার সময় বা কোনো কাজ করার সময় বাড়তে পরে
৩. মাসিকের সময় ট্যাম্পন বা কাপ ব্যাবহার সমস্যা
৪. মূত্রত্যাগ ঠিক ভাবে না হওয়া এবং মূত্রত্যাগের সময় ব্যাথা
এই রোগের চিকিৎসায় ইস্ট্রোজেন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি খুবই কার্যকর। এছাড়াও কেগেল এক্সারসাইজের ব্যাবহার বহুল প্রচলিত, যা আলগা হয়ে যাওয়া পেশী গুলিকে পুনরায় শক্তিশালী করে তোলে। কোনো কোনো চিকিৎসক পেসারি নামক একধরনের ডিভাইস এর ব্যাবহার করে থাকেন, যেটির সাহায্যে মূত্রথলি কে আগের অবস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। রোগটি খুবই গুরুতর হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে অস্ত্রপ্রচার করতে হতে পারে।
১. কোনো ভারী বস্তু তোলা বা ব্যায়াম করার সময় পেলভিক পেশী তে যাতে আঘাত না লাগে সেদিকে লক্ষ্য রাখা
২. একটি সঠিক ওজন নিয়ন্ত্রণ করা
এটি একধরনের যৌন অক্ষমতা, যেখানে পুরুষ লিঙ্গের উত্থানের সমস্যা হয়। সমস্যার গভীরতা ব্যক্তি বিশেষে আলাদা হতে পারে। যেমন কোনো কোনো রোগীর ক্ষেত্রে লিঙ্গের উত্থান একদমই হয় না। আবার, কোনো কোনো রোগীর ক্ষেত্রে উত্থান হলেও তা দীর্ঘ সময় স্থায়ী হয় না। ফলে পরিপূর্ণ যৌনমিলন সম্ভব হয় না।
যৌন উদ্দীপনা এবং লিঙ্গের উত্থান খুবই জটিল একটি শারীরিক প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়া টিকে ঠিক ভাবে সম্পাদন করার জন্য হরমোন, মস্তিষ্ক, পেশী ইত্যাদি একসাথে কাজ করে। এগুলির মধ্যে কোনো একটির সমস্যা দেখা দিলেই ইরেক্টাইল ডিসফাংশন হতে পারে। এই রোগটি শারীরিক বা মানসিক দুই ধরনের অসুবিধার জন্যই হতে পারে। যদি কোনো ব্যক্তির যৌন সমস্যা থেকে থাকে তাহলে সেটি নিয়ে দুশ্চিন্তা, বিষণ্ণতা, চাপ ইত্যাদি এই রোগটিকে আরো গুরুতর করে তোলে।
১. এই রোগের সব থেকে পরিচিত লক্ষণ টি হলো যৌনাঙ্গের উত্থান না হওয়া বা বেশিক্ষণ উত্থান ধরে রাখতে সমস্যা
২. যৌন ইচ্ছা কমে যাওয়া বা একদমই না হওয়া
৩. শরীরে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা অনেক কমে যাওয়া
৪. স্বাভাবিকের থেকে অনেক দ্রুত বা বিলম্বে বীর্যপাত হওয়া
প্রথমত, জেনে রাখা ভালো যে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন কোনো দীর্ঘস্থায়ী জটিলতা নয় এবং সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এটি খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। রোগের তীব্রতা অনুযায়ী চিকিৎসক কিছু মেডিসিন ব্যাবহার করে থাকেন। এছাড়াও টেস্টোস্টেরন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপির ব্যাবহার বহুল প্রচলিত। গুরুতর ক্ষেত্রে পেনিস পাম্প, ইমপ্ল্যান্টস ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। মানসিক সমস্যা দুর করার জন্য চিকিৎসক কাউন্সেলিং-এর পরামর্শ দিতে পারেন।
১. সঠিক ওজন ধরে রাখা
২. সাস্থ্যকর খাবার এবং শরীরচর্চার অভ্যেস গড়ে তোলা
৩. ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করা
৪. সম্পর্কের কোনো সমস্যা থাকলে কাউন্সেলিংয়ের সাহায্য নেওয়া