এই সমস্যা টি তৈরি হয় যখন মেরুদণ্ডে আঘাতের ফলে মেরুদণ্ডের সঙ্গে লেগে থাকা স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গুরুতর আঘাত থেকে বেশ স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে যেমন পক্ষাঘাত, যা মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন কে বিপন্ন করে তোলে।
এই রোগটি হওয়ার প্রধান কারণ মেরুদণ্ডে আঘাত পাওয়া যেটি খেলাধুলা, গাড়ি দুর্ঘটনা, হটাৎ কোনো আঘাত ইত্যাদি থেকে হতে পারে। যখন মেরুদণ্ডে আঘাতের ফলে মেরুদণ্ডে ফাটল ধরে বা ভেঙ্গে যায় সেখান থেকে স্পাইনাল কর্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়াও অনেকসময় হাড় না ভাঙলেও আঘাতের ফলে মেরুদণ্ডের আশেপাশে রক্তপাত ও পুঁজ জমা হতে থাকে এবং সেখান থেকে সংক্রমণ স্পাইনাল কর্ড পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।
আঘাতের মাত্রা ও স্থানের ওপর নির্ভর করে রোগটি কতোটি গুরুতর এবং তার লক্ষণ
১. প্রথম যে লক্ষণটি দেখা যায় টা হলো চেতনা শক্তি নষ্ট হয়ে যাওয়া
২. এছাড়াও আরো একটি পরিচিত লক্ষণ হলো পক্ষাঘাত বা প্যারালাইসিস, যেটি হাতে ও পায়ে বা যে কোন এক জায়গায় হতে পারে
৩. মুখের অভিব্যক্তি দ্বারা নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে না পারা
৪. মূত্র ও মলত্যাগের ক্ষমতা চলে যাওয়া
৫. পিঠ, ঘাড় ও মাথায় তীব্র ব্যাথা
যদি আঘাত খুব গুরুতর হয় সেক্ষেত্রে চিকিৎসক অস্ত্রপ্রচার করে থাকেন, যার মাধ্যমে হাড়ের ভেঙ্গে যাওয়া ঠিক করা হয়। এছাড়াও দীর্ঘদিনের জন্য বেড রেস্টের প্রয়োজন হয়। আঘাত অল্প হোক বা গুরুতর, ব্যাথা কমানো ও প্রদাহ তাড়াতাড়ি ঠিক করার জন্য ওষুধের ব্যাবহার বাধ্যতামূলক। এছাড়াও ফিজিওথেরাপি শরীরের কার্যক্ষমতা পুনরায় ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে, যেটি বিভিন্ন রকমের ব্যায়াম ও আধুনিক যন্ত্রপাতির সাহায্য সম্পূর্ণ করা হয়।
এই সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য সাবধানে চলা ফেরা করা ও নিজেকে আঘাত থেকে বাঁচিয়ে চলা প্রয়োজন।
এটি এমন একটি রোগ যেখানে সময়ের সাথে সাথে রোগীর স্মৃতিশক্তি লোপ পেতে থাকে যেটিকে মেডিক্যালের পরিভাষায় ডিমেনশিয়া বলা হয়। এই সমস্যা টি প্রধানত বয়সকালে বেশি দেখা যায়, ফলে রোগীর প্রতিদিনের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়।
এই রোগের কোনো নির্দিষ্ট কারণ নেই। তবে বিজ্ঞানী রা লক্ষ্য করেছেন, যে সমস্ত ব্যাক্তি এই সমস্যায় ভুগছেন তাদের মস্তিষ্কের মধ্যে এক ধরনের প্রোটিন জাতীয় বস্তু প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি অবস্থিত। এই প্রোটিন জাতীয় বস্তুর অপ্রয়োজনীয় উপস্থিতি মস্তিষ্ক কে স্বাভাবিক ভাবে কাজ করতে দেয় না। এছাড়াও এই রোগটি হওয়ার পিছনে জিনের খুব বড়ো একটি ভূমিকা রয়েছে। তাই পরিবারে এই রোগের উপস্থিতি থাকলে অবশ্যয় সাবধান হওয়া উচিত।
১.এই রোগটির প্রধান এবং প্রথম লক্ষণ হলো সব কিছু ভুলে যেতে থাকা এবং এই ভুলে যাওয়ার গভীরতা তিনটি স্তরের মাধ্যমে ধীরে ধীরে এগোতে থাকে।
২.প্রথম দিকে ছোটো ছোটো জিনিস ভুলে গেলেও পরবর্তী কালে বাস্তবের সাথে সম্পর্ক হারিয়ে ফেলা, মল মূত্র ত্যাগ করতে না পারা ইত্যাদি সমস্যা দেখা যায়।
৩.একদম শেষ পর্যায়ে রোগী সাধারণ কোনো বাক্যালাপেও সারা দিতে পারেনা এবং প্রাণহানির সম্ভাবনা প্রবল হয়।
এই রোগ সম্পূর্ণ ভাবে নিরাময় করা এখনো সম্ভব হয়নি, তবে কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে যা আনুসঙ্গীক লক্ষণ গুলিকে কমাতে সাহায্য করে। শরীরচর্চা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, সিঙ্গিং ও ডান্সিং থেরাপি, অ্যারোমা থেরাপি, মাল্টি সেন্সরি স্টিমুলেশন ইত্যাদি ব্যাবহার করে রোগীকে একটি স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে সাহায্য করা হয়।
১. ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা
২. শরীরচর্চা ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস
৩. নিয়মিত একই সময়ে ঘুমানো
৪. মদ্যপান ও ধূমপান ত্যাগ করা
এটি একটি স্নায়বিক রোগ, যেখানে মুখের একদিক পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়। মুখের একদিকের পেশীগুলি হটাৎ করে দুর্বল হয়ে পরে, ফলে সাধারণ কাজকর্ম যেমন কথা বলা, খাবার খাওয়া, চোখের পাতা বন্ধ হওয়া ইত্যাদি কাজ গুলি করতে সমস্যার সৃষ্টি হয়। এই সমস্যাগুলি সাধারণত সাময়িক এবং সঠিক চিকিৎসার দ্বারা সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব।
এই রোগটি হওয়ার নির্দিষ্ট কোনো কারণ এখনো পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে কিছু কিছু বিজ্ঞানীর মতে কোনো বিষাক্ত জিনিস বা ভাইরাসের উপস্থিতি থেকে এটি হতে পারে। ভাইরাস বা বিষাক্ত বস্তুটির কারণে আমাদের দেহের সপ্তম ক্রেনিয়াল নার্ভ টি ঠিকভাবে কাজ করতে পারেনা এবং এই সমস্যাটির সৃষ্টি করে। এছাড়াও কিছু কিছু ক্ষেত্রে ঠান্ডা লাগা, জ্বর, কাশি ইত্যাদি থেকে সাময়িক এই সমস্যা টি হতে পারে।
১. একদিকের চোখের পাতা বন্ধ হয়ে যাওয়া
২. মুখের একদিকের অভিব্যক্তি নষ্ট হয়ে যাওয়া
৩. খাওয়া, কথা বলা, হাসা ইত্যাদি কাজে অসুবিধা
৪. জিভের স্বাদগ্রহনে সমস্যা
৫. কিছু কিছু ক্ষেত্রে মুখে ও মাথায় ব্যথা
এই রোগের চিকিৎসার জন্য কর্টিকো স্টেরয়েড সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও ব্যাথা কমানোর ওষুধ ও দেওয়া হয়। যদি কোনো ভাইরাস আক্রমণের ফলে এটি হয়, তাহলে অ্যান্টি ভাইরাল ওষুধ ব্যাবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়াও, ফিজিও থেরাপির ব্যাবহার এই রোগের চিকিৎসায় বহুল প্রচলিত। তবে চিকিৎসার ফল সবার ক্ষেত্রে সমান হয় না, কিছু মানুষের ক্ষেত্রে কয়েক মাসেই এটি ঠিক হয়ে যায় আবার অনেকের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন সময় লাগে।
১. যে সমস্ত ব্যক্তি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের ক্ষেত্রে এই রোগটি হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি, তাই ডায়াবেটিস হলে সেটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে
২. এই রোগের পারিবারিক কোনো ইতিহাস থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত
৩. মুখমণ্ডল কে কোনো ক্ষত বা আঘাত থেকে বাঁচানো
এই স্নায়বিক রোগটি একটি প্রাণঘাতী রোগ, যা সময়ের সাথে সাথে মানুষের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা গুলিকে নষ্ট করে ফেলে। এই রোগে নার্ভ কোষ গুলি ধীরে ধীরে ধ্বংস হতে থাকে যার ফলে হাঁটা, খাওয়া এমনকি শ্বাস প্রশ্বাসের অক্ষমতাও শুরু হয়
এই রোগের কোনো নির্দিষ্ট কারণ নেই, তবে ১০% শতাংশ ক্ষেত্রে এটি জিনগত। বাকি কারণ গুলি নির্দিষ্ট না হলেও সম্ভাব্য কিছু কারণ রয়েছে যেমন
এই রোগের লক্ষণ গুলি হলো
১. ভারসাম্য বজায় রাখতে না পেরে ঘন ঘন পরে যাওয়া
২. অঙ্গবিন্যাসের পরিবর্তন ঘটে যাওয়া
৩. ঠিক ভাবে কথা বলতে না পারা ও অস্পষ্ট উচ্চারণ
৪. হাঁটু, গোড়ালি, পায়ের পাতা ইত্যাদি অংশে ব্যাথা
৫. খাবার গিলতে অসুবিধা হওয়া
৬. পেশী তে টান ধরা
এই রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ওষুধের ব্যাবহার বহুল প্রচলিত। নার্ভের মধ্যে বিভিন্ন কেমিক্যালের ভারসাম্য বজায় রাখতে ওষুধ ব্যাবহার করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন লক্ষণ গুলি কমাতে ও রোগী কে একটি স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে সাহায্য করার জন্যও বিভিন্ন রকমের ওষুধ রয়েছে। এগুলির সাথে সাথে সহায়ক থেরাপি ব্যাবহার করা হয় যা রোগীর দৈনন্দিন কাজ গুলিকে সহজ করে তোলে, যেমন স্পিচ থেরাপি কথা বলার সমস্যা দুর করে। ফিজিও থেরাপির ব্যাবহার ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।
সতর্কতা
১. এই রোগটি থেকে সতর্ক থাকার নির্দিষ্ট কোনো উপায় নেই
২. এই রোগের কোনো লক্ষণ বোঝা গেলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
৩. এই রোগের পারিবারিক ইতিহাস থাকলেও চিকিৎসকের পরামর্শ মতো সাবধানতা অবলম্বন করুন